যাত্রা: বন্ধুদের সাথে মেঘালয়ে
Posted on April 13, 2023 • 2 minutes • 390 words
Table of contents
৩১শে অক্টোবর, ২০২২
রাত ১১ঃ৪৫ কি ১২ঃ০০ টা, মাঝপথে ট্রেন থামলো হবিগঞ্জে। নামবো কি নামবো না, এই ভাবতে ভাবতে নেমেই পড়লাম। নেমে কিছুক্ষণ এখান সেখান পাঁয়তারা করার পর কী ভেবে উপরে তাকালাম।
তারাভর্তি এরকম আকাশ, লোকালয়ের এত কাছে, সমতল থেকে দেখতে পাওয়া যাবে, তা ভাবিনি। অনেকক্ষণ চেয়ে চেয়ে দেখলাম, আদনান ভাই এবং বাকিদের সাথে হালকা গল্প টল্প করলাম। আদনান ভাই বললেন, এই এরিয়াতে নাকি প্রায়শই এরকম আকাশ দেখা যায়, আলোকদূষণ কম থাকায় এবং আকাশে মেঘ না থাকায় বেশ ভালো একটা দৃশ্য দেখা হয়ে গেল। ওদিকে তাসাওয়ার ক্যামেরা দিয়ে তারার ছবি তুলছে।
বলা হয় নি, আদনান ভাই আমাদের সাথেই সিলেট যাচ্ছেন, সেখানেই তার বাড়ি। উনার আম্মা আর খালাকে নিয়ে ঢাকা বেড়াতে এসেছিলেন। সিলেটে উনার ট্যুরিজম এর এজেন্সি আছে, দেশ ও বিদেশে ট্যুরের ব্যবস্থা করে দেন। আলাপ আলোচনার এক পর্যায়ে এসে উনার সাথে নাম্বার আদান প্রদান করলাম। আমাদের ব্যাপারেও বললাম- টার্ম ব্রেক, এক্সাম শেষ, ট্যুর দিতে ইন্ডিয়া যাচ্ছি। শুনে উনি বেশ খুশি হলেন, কিছু জায়গা ঘুরার জন্য সাজেস্টও করলেন।
এখন লিখতে বসে আমার মনে হচ্ছে উনার সাথে একটা ছবি তুলে রাখা দরকার ছিল। তখন লজ্জায় বলতে পারি নি একটা ছবি তুলার জন্য (এপ্রিল ১৩, ২০২৩)
আমরা ট্রেনে উঠলাম, ট্রেন আবারও চলা শুরু করলো। আদনান ভাই আর তাসাওয়ার দেখি দুই বগির মাঝখানে আড্ডা দিচ্ছে। আমি গিয়ে যুক্ত হলাম উনাদের সাথে। আদনান ভাই জিজ্ঞেস করলেন- “রঙ চা খাবেন?” আমি ভদ্রভাবে উনার আতিথেয়তা গ্রহণ করলাম। চা খেতে খেতে আর ট্রেনের ঝাকুনিতে দুলতে দুলতে গল্প করছিলাম। ইন্ডিয়া ট্যুরের প্ল্যান, কোথায় পড়ছি, সিলেটে এর আগে ঘুরেছি কি না, ইত্যাদি। চা খাওয়া শেষ হলে আমরা সিটে গিয়ে বসলাম, আমি ফোন দিলাম মান্নান মামা- আমাদের লেগুনা ড্রাইভারকে। ঠিক এক বছর আগে একই সময়ে সিলেটে গিয়েছিলাম, তখন থেকেই উনার সাথে পরিচয়। আমাদের সিলেট পৌছানোর টাইম কনফার্ম করে বসে টুকিটাকি গল্প করতে লাগলাম।
তারপর কী নিয়ে আড্ডা দিলাম, গল্প করলাম, মনে নেই। হঠাৎ চোখ খুলে দেখি আবছা আলো, শুনে বুঝলাম সিলেট পৌছে গেছি। ট্রেন থেকে নেমে মান্নান মামাকে ফোন দিলাম- মামা জানালো ৩০ মিনিট লাগবে আসতে। ভোরের আলো তখনও ওঠে নি, মৃদু আওয়াজে ফজরের আযান শোনা যাচ্ছে। হেলে দুলে কিছুক্ষণ প্ল্যাটফর্মে বসে রইলাম, খোশ গল্প করলাম। কিছুক্ষণ পর এক গার্ড এসে তাড়িয়ে দিল, বললো যে, এখানে থাকা যাবে না, স্টেশনের ভিতরে গিয়ে যেন বসি।
অতঃপর, আমরা ভিতরে গিয়ে বসলাম। তাসাওয়ার তার ক্যামেরা নিয়ে সেখানের ৩-৪ তলায় উঠে গেল, খপখপ কিছু ছবি তুলল। মামার ফোন পাওয়া মাত্রই আমরা লাগেজ নিয়ে বের হওয়া শুরু করলাম। লেগুনায় উঠে যাত্রা শুরু করলাম- পূর্বাশার বাসার উদ্দেশ্যে।